mbtv24.com: আসসালামু আলাইকুম। সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রবিউল ইসলাম। বন্ধুরা, জন্ম নিবন্ধন করা বর্তমানে বেশ জটিল একটা কাজ।আর সঠিক নিয়ম না জানলে আপনাকে আরো ঝামেলা বা হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে।আজকে আমরা দেখবো, কিভাবে ঘরে বসেই জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করবেন, কি কি ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে এবং কত টাকা খরচ হবে।
জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী বয়সভেদে একেকজনের জন্য একেক রকম ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে।আপনাদের সুবিধার্থে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ এর লিংকটি নিচে দেওয়া হলো। লিংকে ক্লিক করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮
আজ আমি আপনাদেরকে ৪০ বছরের বেশি বয়স্ক একজনের জন্মনিবন্ধনের আবেদন করে দেখাবো।আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন যে, জন্মনিবন্ধনের আবেদন করার জন্য মাতা-পিতার জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এটার ক্ষেত্রে হবেনা।কারণ বয়স অনেক বেশি।যা হোক এই বিষয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা না করে এই বিষয়ক সংক্রান্ত গেজেটের লিংকটি নিচে দেওয়া হলো।https://orgbdr.portal.gov.bd/sites/default/files/files/orgbdr.portal.gov.bd/page/9643f9f7_332c_44d4_b495_c0a28424b548/2020-02-12-22-57-c267ffad2b4dd28922daf44e39e39bf0.pdf
অনুগ্রহ একটু কষ্ট করে দেখে নিবেন। এখন আমরা চলে যাবো কম্পিউটার স্ক্র্রীনে এবং অনলাইনে আবেদনটি সম্পূর্ণ করবো।যদি আপনি মোবাইল থেকে করতে চান তাহলে ক্রোম বাউজারটি ওপেন করে থ্রি ডট মেনু থেকে ডেক্সটপ সাইটটি সিলেক্ট করে নিন। তাহলে কম্পিউটারের মতই হয়ে যাবে।তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
প্রথমে https://bdris.gov.bd/ এই লিংকে ক্লিক করে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের নতুন ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন।
তারপর ‘জন্মনিবন্ধন’ মেনু >> থেকে ‘জন্ম নিবন্ধনের আবেদন’ মেনুতে ক্লিক করুন।তাহলে আপনার সামনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরমটি প্রদর্শিত হবে। ফরমটি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।উল্লেখ্য জন্মতারিখ ইনপুট দেওয়ার পর আপনার সামনে একটি পপআপ মেনু আসবে। যেখানে লেখা থাকবে ঐ জন্ম নিবন্ধনটি করতে আপনার কি কি ডকুমেন্টের দরকার হবে। যদি আপনার সেগুলো না থাকে তো আগে সেগুলো সংগ্রহ করুন। পপআপ মেনুটি আসলে সেখান থেকে সবুজ রংয়ের ‘আমার কাছে এই ডকুমেন্ট গুলো আছে’ বাটনে ক্লিক করুন। তারপর বাকি তথ্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করে ‘পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
২য় ধাপে আপনার পিতা-মাতার তথ্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করে ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন।
৩য় ধাপে আমাদেরকে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা লিখতে হবে।তারপর ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন।
৪র্থ ধাপে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করে ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন।তাহলে আপনার পূরণকৃত সকল তথ্যাদি দেখাবে। সব ঠিক থাকলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।আর যদি কোন তথ্য ভুল হয়ে থাকে তো ব্যাকে গিয়ে সেটা ঠিক করে আবারো এই পেজে চলে আসুন এবং সব শেষে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার আবেদনটি সফলভাবে সাবমিট হয়ে যাবে এবং আপনাকে একটি ট্রাকিং নাম্বার দেয়া হবে।নিচে সবুজ রংয়ের আবেদন প্রিন্ট করুন বাটনে ক্লিক করে আবেদন ফরমটি প্রিন্ট করে নিন অথবা পিডিএফ আকারে সেভ করেও রাখতে পারেন।
একই কাগজের দুপাশে প্রিন্ট করবেন।তারপর এটাকে আপনার ডকুমেন্টগুলো সংযুক্ত করে নির্দিষ্ট অফিসে জমা দিবেন।তাহলে ঐ অফিস আপনাকে আপনার জন্মসনদটি রেডি করে দিয়ে দিবেন।
এবার আমরা জানবো, কত টাকা খরচ হবে। জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন ফি হলোঃ
- জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫(পঁয়তাল্লিশ)দিন পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন সম্পূর্ণ ফ্রি। এতে কোন প্রকার টাকা লাগবে না।
- জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন পর হইতে ৫(পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন (সাকুল্যে)২৫ টাকা। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে করলে দিতে হবে ১ মার্কিন ডলার।
- জন্ম বা মৃত্যুর ৫ (পাঁচ) বৎসর পর হইতে কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন (সাকুল্যে) ৫০ টাকা এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে করলে দিতে হবে ১ মার্কিন ডলার।
- জন্ম সনদের কোন তথ্য সংশোধনের জন্য দিতে হবে ১০০ টাকা এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে করলে দিতে হবে ২ মার্কিন ডলার।
- জন্ম তারিখ ব্যতীত নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা, ইত্যাদি অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি দিতে হবে ৫০ টাকা এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে করলে দিতে হবে ১ মার্কিন ডলার।
- দেশে কিংবা বিদেশে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনের পর সনদের কপি নিতে কোন টাকা লাগবেনা।
- বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় সনদের নকল নিতে চাইলে দিতে হবে দেশে ৫০ টাকা বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে করলে দিতে হবে ১ মার্কিন ডলার।
বন্ধুরা, এই হলো জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের আবেদন ফিস।আপনারা এই টাকার ১ টাকাও বেশি দিবেননা। দেশের সকল জন্ম মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়েই এই একই ফিস প্রযোজ্য হবে।এই ফিস ব্যতিত কোন অফিসের যে কোন ব্যক্তি যদি এর বেশি অর্থ দাবী করেন তো আপনি সেটা দিবেন না।কেউ এর বেশি অর্থ দাবী করলে বা কারও দ্বারা হয়রানির শিকার হলে আপনি অভিযোগ করতে পারেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা উপপরিচালক স্থানীয় সরকার বা জেলা প্রশাসক এর নিকট।তাহলে আশা করি আপনি সমাধান পেয়ে যাবেন।
পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক,কমেন্ট ও শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।কথা হবে পরবর্তী টিউটোরিয়ালে।ভাল থাকবেন সবাই। খোদা হাফেজ।
আবেদন করার ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখুন নিচের ভিডিওতে-