মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারে শরীরের যে সকল ক্ষতি হয়।

ফিচার-বিশেষ প্রতিবেদন বিনোদন সংবাদ শিক্ষা সংবাদ সকল সংবাদ সংবাদ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
Share on Social Media
 
    
   

মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার ও আসক্তি যে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা গবেষক ও চিকিৎসকেরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে। আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠা মুঠোফোনে অতি আসক্তি ও অতি নির্ভরতা স্বাস্থ্যর ওপর কু-প্রভাব ফেলে।

মুঠোফোনের অতি ব্যবহারের কুফল নিয়ে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ভারতের মুম্বাইভিত্তিক প্রসূতি ও ধাত্রীবিদ্যাবিষয়ক গবেষক নন্দিতা পালসহেটকার জানিয়েছেন মুঠোফোন থেকে হাই ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গত হয়। এই ক্ষতিকর তরঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কে ক্যানসারের যোগসূত্র থাকতে পারে।

এ ছাড়া শরীরের অন্য কোষকলা এই ক্ষতিকর তরঙ্গের প্রভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে পুরুষের প্রজননতন্ত্রেরও। অধিকাংশ পুরুষই তাঁর মুঠোফোন প্যান্টের পকেটে রাখেন। এ সময় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন পুরুষের প্রজননতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে এবং শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দিতে পারে।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, ফোন ব্যবহার করা না হলেও তরঙ্গসংকেত পাওয়ার জন্য ফোন যে সংকেত ছাড়ে, তাও ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

মুঠোফোন তরঙ্গে শুক্রাণুর ক্ষতিবিষয়ক সাম্প্রতিক এক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা এ তথ্য পেয়েছেন। তবে এ তরঙ্গ ডিএনএর ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে কি না, সে বিষয়ে ভবিষ্যতে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।

গবেষকেরা আরও জানান, মুঠোফোনে কথা বলার সময় যে পরিমাণ ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক তরঙ্গ নির্গত হয়, মুঠোফোনের সাইলেন্ট মোডে তার চেয়ে কম তরঙ্গ নির্গত হয়। তবে যেকোনো অবস্থায় তা প্রজননতন্ত্রের কাছে এলে ক্ষতির কারণ হতে পারে বলেই সতর্ক করেছেন গবেষকেরা।

ঝুঁকিতে শরীরে পেসমেকার প্রতিস্থাপনকারীরা আন্তর্জাতিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সুরেশ বিজন জানিয়েছেন, মুঠোফোন ও সহজে স্থানান্তরযোগ্য মিডিয়া প্লেয়ারগুলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাপের বৈদ্যুতিক ও চুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ হৃৎপিণ্ডের গতির ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্ষেত্রগুলোর শক্তি কোনো প্রভাব ফেলে না।

তবে পেসমেকার বসানো হৃৎপিণ্ডে বা হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পর সেখানে এ ধরনের কোনো যন্ত্র ব্যবহারের পর মুঠোফোনের তরঙ্গে কোনো প্রভাব ফেলে কি না, তা নিয়ে চালানো গবেষণায় উল্টো ফল দেখেছেন গবেষকেরা।

হৃৎপিণ্ডে বসানো যন্ত্র মুঠোফোনের তরঙ্গে প্রভাবিত হতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যায় মুঠোফোন থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়। পেসমেকারযন্ত্র থেকে মুঠোফোনের দূরত্ব রাখতেই পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা। শরীরের জয়েন্ট বা সন্ধিগুলোর ক্ষতি

জয়েন্ট প্রতিস্থাপন চিকিৎসক নীরদ ভেং সরকার জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সময় ধরে মেসেজ বা বার্তা টাইপ করা হলে আঙুলের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হতে পারে এবং অবস্থা বেশি খারাপ হলে আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসক নীরদ আরও জানিয়েছেন, আঙুলের ব্যথাজনিত সমস্যার রোগী বাড়ছে। অনেকে ঘাড় ব্যথার সমস্যায়ও পড়ছেন। কারণ, অনেকেই কাজের সময় মুঠোফোন ব্যবহার করতে গিয়ে কাঁধ ও কানের মাঝে ফোন রেখে কথা বলেন।

অনেকেই অতিরিক্ত ঝুঁকে বসে দীর্ঘ সময় ধরে বার্তা পাঠাতে থাকেন। বসার ভঙ্গির কারণেও শরীরে নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোনে বার্তা লিখবেন না, এতে করে শরীরের জয়েন্ট বা সন্ধির সমস্যা থেকে সুস্থ থাকতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *